খুলনায় লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ জনজীবন
খুলনায় অব্যাহত লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। দিনে-রাতে ৬-৭ ঘন্টা বিদ্যুৎবিহীন থাকতে হচ্ছে। সেই সাথে ভ্যাপসা গরমে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে সাধারণ মানুষ। লোডশেডিংয়ে কলকারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। কম্পিউটারের দোকান, টেইলার্স, ইন্টারনেট সার্ভিস, শিক্ষা চিকিৎসা, কৃষি সব ক্ষেত্রে ভোগান্তি বাড়ছে। গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছে ছোট শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সিরা।
শেখপাড়া হাজী ইসমাইল রোডের বাসিন্দা এসএম আকরাম হোসেন জানান, দিনে-রাতে ৬-৭ বার বিদ্যুৎ চলে যায়। গরমে ফ্লাটের বাসিন্দারা অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। ছেলে মেয়ের লেখাপড়া বিঘিœত হয়। ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) সূত্রে জানা যায়, খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ২১ জেলায় পিকআওয়ারে বিদ্যুতে চাহিদা থাকে ৬৫০-৬৭০ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে সরবরাহ মিলছে ৫৪০-৫৭০ মেগাওয়াট। ফলে লোডশেডিং হয় গড়ে ১০০-১১০ মেগাওয়াট। এদিকে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ যাওয়া-আসার কারণে ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্র নষ্ট হতে শুরু করেছে। লোডশেডিংয়ে দোকানপাট, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানসহ অফিস-আদালতে কাজের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। উৎপাদন বন্ধ থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। হিমাগারে খাবার সংরক্ষণেও ঝামেলা হচ্ছে। ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক হুমায়ুন কবীর বলেন, লোডশেডিং হলে চিংড়ি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর কোল্ড স্টোরেজে তাপমাত্রা ঠিক রাখতে চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে। এছাড়া আমদানিকারকদের কোটি কোটি টাকার আমদানি করা খাদ্য পণ্য থাকে বিভিন্ন কোল্ড স্টোরেজে। বিদ্যুতের অভাবে যা নষ্ট হওয়ার আশংকা থাকে। লোডশেডিং চলাকালে জেনারেটর চালিয়ে রাখতে বাড়তি ব্যয় হয়। শহরের তুলনায় গ্রামে লোডশেডিং’র ভয়াবহতা আরও বেশি। ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎ না থাকলে স্থবির হযে পড়ছে জনজীবন। পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির তেরখাদা সাব জোনাল অফিসের সহকারি ম্যানেজার মো. বিদ্যুৎ মল্লিক জানান, চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেকের নিচে নেমে আসায় ঘনঘন লোডশেডিং দিতে বাধ্য হচ্ছেন। একইভাবে ওজোপাডিকো কর্মকর্তারা জানান, কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ থাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদন কমেছে। এতে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুতের সরবরাহ মিলছে না। অফপিক আওয়ারে (দিন) বিদ্যুতের চাহিদা-সরবরাহ কাছাকাছি থাকলেও পিক আওয়ারে চাহিদা বাড়তে থাকলে লোডশেডিংও বাড়তে থাকে।